বুধবার, মে ১৫, ২০২৪
spot_img

সোনারগাঁয়ে ইউপি সদস্য ও সাবেক বিএনপি কর্মী খোরশেদ ফরাজির তান্ডব

সংবাদ১৬.কমঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য খোরশেদ ফরাজির বিরুদ্ধে প্রতি ওয়ারিশ আবেদনে ৫ হাজার টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

পিরোজপুর ইউনিয়নের তাতুয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা এক বেসরকারি ব্যাংকের নিরাপত্তা কর্মী ও তার নিকটতম আত্মীয় ওয়ারিশ সনদের জন্য ওই ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন করেছিলেন। নিয়ম মাফিক আবেদন পত্রে ইউপি সদস্যের সাক্ষর নিতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয় তাদের। দুটি ওয়ারিশ আবেদন পত্রে সাক্ষর নিতে খোরশেদ ফরাজি তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় ১০ হাজার টাকা।

স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন-২০০৯-এর অস্পষ্টতায় একজন নাগরিক কত টাকা দিয়ে সেবা পাবেন, তা নির্ধারণ করা হয়নি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে,  এক সময় বিএনপির সক্রিয় রাজনীতিবিদ (কর্মী) ছিলেন খোরশেদ ফরাজি। তৎকালীন সোনারগাঁয়ের সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী রেজাউল করিম ও বিএনপি নেতা আজহারুল ইসলাম মান্নানের পেছনে একটি অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে থাকার ছবি ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ২০০৮ সালে বিএনপি ক্ষমতা হারালে সে সৌদি চলে যায়। দীর্ঘদিন প্রবাস থেকে আলাদিনের চেরাগ পেয়ে দেশে এসে গত ইউপি নির্বাচনে বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় করে সে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। এরপর থেকেই তাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি৷

আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতার পেছনে ঘুরে সে তাদের একনিষ্ঠ কর্মী দাবী করে জমির দালালী ও বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয়ে বনে গেছে কোটি কোটি টাকার মালিক। সম্প্রতি এক ব্যবসায়ীকেও সে মুঠোফোনে অশালীন ভাষায় গালমন্দ  ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন। এমন একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে পুরো উপজেলার বিভিন্ন মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

 বেসরকারি একটি ব্যাংকের নিরাপত্তা কর্মী নুরুল হক জানান, আমি খোরশেদ ফরাজির এলাকার একজন বাসিন্দা। কিছুদিন আগে ওয়ারিশ সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করলে তার সাক্ষর নিতে গেলে সে আমার ও আমার নিকট আত্মীয়ের থেকে ৫’হাজার করে মোট ১০’হাজার টাকা নেয়। কিসের টাকা জানতে চাইলে সে বলে অনেক টাকা ভাইঙ্গা নির্বাচনে পাস করছি। টাকা দিলে সাক্ষর করমু নয়তো করমুনা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক নেতা জানান, খোরশেদ ফরাজি’র কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা নাই। সে আগে বিএনপির কর্মী ছিলো। বিএনপি ক্ষমতা হারালে সে বিদেশ চলে যায়। তারপর কয়েক বছর হয় সে দেশে এসে বেপরোয়া হয়ে গেছে। বিতর্কিত এই ইউপি সদস্যের এতো অপকর্ম প্রকাশ হওয়ার পরেও তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, খোরশেদ ফরাজি মেম্বার হয়ে এলাকার বিচার-সালিশে টাকা ছাড়া এক পা আগাতে চায়না। তার শেল্টারে এলাকার যুব-সমাজ জুয়া, মাদক ও বিভিন্ন অনৈতিক কাজে লিপ্ত হচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলেই প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে।

এব্যপারে অভিযুক্ত খোরশেদ ফরাজি জানান, একশ্রেনীর কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে অপ-প্রচার চালাচ্ছে। এসব তথ্য সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মফিজুর রহমান সুমন জানান, আমাদের এখানে ওয়ারিশের আবেদন পত্র বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। যদি কোনো ইউপি সদস্য টাকা নিয়ে থাকে কাজটি ঠিক করেনি।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ আনোয়ার হোসাইন বলেন, নীতিমালার বাইরে নাগরিক সেবা প্রদানে টাকা নেয়ার কোন সুযোগ নেই। সুস্পষ্ট অভিযোগ পেলে অভিযুক্ত খোরশেদ ফরাজি’র বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরো দেখুন
Advertisment
বিজ্ঞাপন

সবচেয়ে জনপ্রিয়