![](https://sangbad16.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
মোঃ জিয়াউর রহমান: সারাদেশে প্রচন্ড তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত। তারওপর সারাদিনের প্রায় তিন চতুর্থাংশ সময় বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে নারায়ণগঞ্জ জেলা আড়াইহাজার উপজেলাধীন দ্বীপাঞ্চল কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। গত পনের দিন ধরে এমনই দুর্বিষহ জীবন যাপন করতে হচ্ছে এই ইউনিয়নের মানুষের। এমনকি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য বিদ্যুতের এই অবস্থা খুবই পীড়া দিচ্ছে।
প্রচন্ড তাপদাহে সারাদিন রোজা রেখে ইফতার, তারাবির নামাজ আদায়, রাতে ঘুমাতে যেতে হয় বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায়। তারপর সেহরি খাওয়ার সময় ও বিদ্যুৎ থাকে না।দিনে রাতে ১ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকলে পরবর্তী ২ ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় থাকতে হচ্ছে এই এলাকার মানুষজনকে। তাই ক্ষুব্ধ হয়ে অসংখ্য মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেছেন। তাঁরা অচিরেই এই দূরবস্থার অবসান চান।
ইউনিয়নের একমাত্র যানবাহন ব্যাটারি চালীত অটোরিকশা বিদ্যুত না থাকার কারণে চার্জ দিতে না পারায় প্রচন্ড তাপদাহে পায়ে হেঁটে দৈনন্দিন যাতায়াতের কাজ সারতে হচ্ছে। অটোরিকশা চালক মো. শফিক বলেন, বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে মধ্যে আসে। ইদ সামনে এই সময়ে বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের আয়রোজগার খুব কমে গেছে। সারাদিনে দুই তিন ঘন্টা অটোরিকশা চালাতে পারি। এই টাকায় সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আমার মতো প্রায় তিনশত পরিবার এই পেশায় জড়িত। সবার একই অবস্থা। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্য পরিবার নিয়ে দুবেলা ডালভাত খেয়ে বেঁচে থাকা ও মুশকিল হয়ে উঠছে।
সদ্য ঘোষিত কালাপাহাড়িয়া এরিয়া অফিস, গোপালদী জোনাল অফিস, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ এর ইনচার্জ মো. মাহবুবুল হক (লাইন টেকনিশিয়ান) বলেন, আমার এলাকায় মোট ৯,৫৪৩ জন গ্রাহক আছেন। অপ্রত্যাশিত লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রাহকদের কাছে আমাকে প্রতিনিয়ত জবাবদিহিতা করতে হচ্ছে এমনকি অনাকাঙ্ক্ষিত হুমকির ও সম্মুখীন হতে হচ্ছে। গত ১৬ এপ্রিল তারিখে আমার এখানে ১২ ঘন্টা ৪৫ মিনিট লোডশেডিং ছিল। আসলেই এটা খুবই দুঃখজনক। তবে আমি এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য হোমনা এবং গোপালদী জোনাল অফিসের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে আসছি।
হোমনার ডিজিএম শওকাতুল আলম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হোমনা জোনাল অফিসের আওতাধীন গ্রাহকদের মোট চাহিদা ২০ মেগাওয়াট কিন্তু আমরা পাচ্ছি মাত্র ৭-৯ মেগাওয়াট। তাছাড়া পৌরসভা, উপজেলা পরিষদে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে হয়। তাই অধিকাংশ সময়ই ৫-৬ টি ফিডার লোডশেডিং অবস্থায় রাখতে হচ্ছে।
হোমনা সাবস্টেশন থেকে আলাদা ফিডারের মাধ্যমে আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়ায় বিদ্যুৎ আনার ফলে লোডশেডিং বেশি দেওয়া হচ্ছে কি না? এই প্রশ্নের জবাবে ডিজিএম বলেন, না। চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম হওয়ায় কালাপাহাড়িয়ার পাশাপাশি হোমনার বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকগণ ও একই লোডশেডিং এর আওতায় থাকেন। তবে আশা করছি অচিরেই এই সমস্যার সমাধান হবে।
লোডশেডিংয়ের সিডিউল বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হোমনা জোনাল অফিসের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মো. আলমগীর এই ব্যাপারে বলতে পারবেন। আলমগীর এর মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টা করে ও তাকে পাওয়া যায়নি।
কালাপাহাড়িয়ায় লোডশেডিংয়ের বিষয়ে গোপালদীর ডিজিএম মো. সারোয়ার জাহান বলেন, হোমনার চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ কম হওয়ায় এই সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আমি সার্বক্ষণিক তাদের সাথে যোগাযোগ করছি। আশা করছি দ্রুতই এই সমস্যা দূর হয়ে যাবে।