শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
spot_img

সাভার পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি মাসুম দেওয়ানের চাঁদাবাজি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের রেডিও কলোনী থেকে ব্যাংক টাউন পর্যন্ত এলাকায় কুলি বিটের নামে ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা আদায় করে আসছে সাভার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম দেওয়ানের নেতৃত্বে একটি চাঁদাবাজ চক্র।

এঘটনায় মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী কয়েকটি বাজারের ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ হয়ে চাঁদা আদায় বন্ধসহ কুলিবিটকে অবৈধ দাবি করে উপজেলা প্রশাসনের কাছে বিভিন্ন সময়ে আবেদন করেন।

এর প্রেক্ষিতে ঢাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান ঢাকা জেলার সাভার উপজেলাধীন গেন্ডায় অবস্থিত রাজাবাড়ী মোহাম্মদীয়া সুপার মার্কেট (ব্যক্তি মালিকনাধীন) ফল সুপার মার্কেট ও কৃষিপণ্য পাইকারী কাঁচাবাজারটি ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক হতে টোল আদায় বন্ধ করার জন্য সাভার পৌরসভাকে পত্র প্রেরন করলেও তারা মহাসড়ক হতে টোল আদায় অব্যাহত রেখেছে। যা আইন মোতাবেক দন্ডনীয় অপরাধ। এমতাবস্থায় উক্ত অভিযোগের বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, সরকারি নির্দেশনার বিষয়টি অবগত হবার পর স্থানীয় ব্যাবসায়ীরা তাদের বাজারে কুলিবিট প্রথা বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন। তাদের দাবী তারা এখন থেকে আর কাওকে কোন প্রকার ইজারার টাকা প্রদান করবেনা। কিন্তু পৌর ছাত্রলীগের ব্যানারে আইন অমান্য করে মহাসড়ক থেকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি অব্যাহত থাকায় ব্যবসায়ীরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে।  তারা অভিযুক্ত সাভার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম দেওয়ানসহ চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছে|

রাজাবাড়ি মোহাম্মদিয়া সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, আমাদের এখানের ব্যবসায়ীরা বিগত সময়ে কুলিবিটের ইজারার টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে ব্যাবসায়ীকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আজ থেকে আমরা আর কোন কুলিবিটের ইজারার টাকা প্রদান করবোনা। অবিলম্বে প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে আমরা প্রয়োজনে আন্দোলন গড়ে তুলবো।

কুলিবিটের নামে চাঁদাবাজি বন্ধের আবেদনকারী ও ফল সুপার মার্কেটের পরিচালক মোঃ কুদ্দুস মিয়া বলেন, সাভার পৌরসভা থেকে দীর্ঘদিন ধরে কুলিবিটের নামে মহাসড়ক ইজারা দিয়ে প্রতি বছর প্রায় কোটি টাকা আদায় করা হতো। এর ফলে ইজারাদার কর্তৃক ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময়ে মারধর, লাঞ্চিতসহ ব্যবসায়ীকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতো। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কুলিবিট অবৈধ ঘোষনা করা হলেও এখনও ছাত্রলীগের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। আমরা চাঁদা আদায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলাবো।

চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম দেওয়ানের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাদের কার্যালয়ে গিয়েও বন্ধ পাওয়া গেছে।

ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইন্জিনিয়ার সাইদুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজির ঘটনায় অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মাজহারুল ইসলাম বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকা থেকে রেডিও কলোনী পর্যন্ত মহাসক থেকে কুলি বিটের নামে চাঁদা আদায়ের অভিযোগটির সত্যতা পাওয়ায় পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে তা বন্ধের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিলো। এরপরও তাদের চাঁদা আদায় অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। ঘটনাটি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অহতিত করা হয়েছে। যে কোন সময় উপরের আদেশ পাওয়া গেলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে রাস্তার পাশে পার্কিং করে কোন ধরনের মালামাল লোড আনলোড করা যাবেনা। এ ব্যাপারে আমাদের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

আরো দেখুন
Advertisment
বিজ্ঞাপন

সবচেয়ে জনপ্রিয়