শনিবার, জুলাই ২৭, ২০২৪
spot_img

ঘুষ ও দুর্নীতির গডফাদার কোটিপতি উমেদার আমজাদ! অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দলিল দাতা-গ্রহিতা ও দলিল লেখকদের জিম্মি করে প্রতিদিন অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এছাড়াও ওমেদার আমজাদ হোসেন সোনারগাঁও সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সহকারী, পিওন ও নকল নবীশদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে রেখেছে। ফলে তার বিরুদ্ধে কেউ কোন টু শব্দ করার সাহস পায়না।

বলছিলাম নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও সাব রেজিস্ট্রি অফিসের উমেদার মোঃ আমজাদ হোসেনের কথা। তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা যায়, সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর এলাকার মোঃ হযরত আলী’র ছেলে আকাশ উমেদার মোঃ আমজাদ হোসেনের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ২ মে দুদুকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

সোনারগাঁও সাব রেজিস্ট্রার অফিস এর দলিল লেখকগন জানান, উমেদার আমজাদ হোসেন তাদের পার্টিদের বাড়ীতে গিয়ে দলিল লেখকদের দিয়ে দলিল নিবন্ধন না করিয়ে তাকে দিয়ে দলিল করাতে বলে, তা না হলে সাব রেজিস্ট্রার দিয়ে দলিল নিবন্ধন বন্ধ করে দিবে বলে হুমকি দেয়। দলিল লেখকরা আরও জানান উমেদার আমজাদ হোসেন আমাদের পার্টিদের বাড়ীতে যাওয়া বিষয়টি আমরা সাব রেজিস্ট্রার মোঃ মুজিবুর রহমান কে জানিয়েছি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,  উমেদার মোঃ আমজাদ হোসেন সোনারগাঁও  সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ৬০ টাকা দৈনিক মুজুরিতে সাব রেজিস্ট্রারের বিভিন্ন ফরমাইশ (আদেশ) পালনের জন্য চাকুরি নেন। আমজাদ হোসেন উমেদারের চাকুরি পাওয়ার পর সে অত্র অফিসটি আস্তে আস্তে নিজের কজ্বায় নিয়ে নেয়। শুরু হয় তার দাপট, সে অত্র অফিসের সহকারী থেকে শুরু করে টিসি মোহরার, মোহরার, সবাইকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কর্তৃত্ব দেখাতে শুরু করে। মাত্র ৭-৮ বছর ৬০ টাকা মুজুরিতে চাকুরি করা উমেদার আমজাদ হোসেন এখন কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।

২০২৩ সালে ঘুষ দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে উমেদার আমজাদ হোসেন কে সোনারগাঁও সাব রেজিস্ট্রার অফিসের সাব রেজিস্ট্রার আলী আজগরের সময় জেলা রেজিস্ট্রার উমেদার  আমজাদ হোসেন কে স্ট্যান্ড রিলিজ (তাৎক্ষণিক অবমুক্ত) করা হয়েছে। বদলির আদেশ পাওয়া উমেদার আমজাদ হোসেনকে রূপগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রী অফিসে বদলি করা হয়। দ্রুত তাদের বর্তমান কর্মস্থল ত্যাগ করে সেখানে যোগ দিতে বলা হয়েছে। পরে কয়েক মাস না যেতেই সে জেলা রেজিস্ট্রার ও বিভিন্ন নেতাদের ম্যানেজ করে সোনারগাঁও সাব রেজিস্ট্রি অফিসে আমজাদ হোসেন যোগদান করেন। তার কিছুদিন পরই উমেদার আমজাদ হোসেন  নানাভাবে জনহয়রানী করে দুর্নীতির মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া শুরু করে। বর্তমানে সে নিজেকে অনেক বড় অফিসার মনে করে। কারণ সে সাব রেজিস্ট্রার মোঃ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দাড়িয়ে দলিল চেক করার নামে দাতা-গ্রহীতাকে বিভিন্ন ধরনের খুটিনাটি ভুল ধরিয়ে দাতা- গ্রহীতাদের জিম্মি করে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ আদায় করে থাকে।

নিয়মানুযায়ী একজন উমেদারের কাজ হলো সাব রেজিস্ট্রারের বিভিন্ন আদেশ পালন করা । কিন্ত বাস্তবে তা হচ্ছে না, উমেদার আমজাদ হোসেন নিয়মের বাহিরে গিয়ে দলিল চেক করে। যার কাজ মূলত দলিল চেক করা সেই সহকারী পুতুলের মতো বসে থাকে। কারণ তাকে উমেদার আমজাদ হোসেন ও পারভীন  দলিল চেক করতে দেন না। এই উমেদারের খুটির জোর কোথায়?

জানা যায়, উমেদার আমজাদ হোসেন অনেক চালাক ও  চতুর মানুষ! তার নামে জায়গায় জমি না কিনে তার শশুরের নামে অনেক জমি ক্রয় করেছেন। সূত্র আরও জানায়, উমেদার আমজাদ হোসেন নাকি জেলার রেজিস্ট্রার ও আইজিআর অফিস ম্যানেজ করে এইসব বেপরোয়া কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা আইন মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন ও আইজিআর পরিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

উমেদার আমজাদ হোসেন ঘুষ গ্রহণ ও অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোনো দলিল লেখকের কাছে ঘুষ দাবি করিনি। একটি মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

আরো দেখুন
Advertisment
বিজ্ঞাপন

সবচেয়ে জনপ্রিয়