নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজধানীর মিরপুর পল্লবী থানার লালমাটিয়া টেম্পু স্টেশন সংলগ্ন আদর্শ নগরে বসবাসরত মুজিবুর রহমান (৩০) নামের এক যুবক ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন। রবিবার (১৯ নভেম্বর) রাত আনুমানিক ৯টায় এ ঘটনা ঘটে কালশী রোডের ২২তলা গার্মেন্টসের সামনে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী মুজিবুর রহমান পল্লবীর ২২ তলা গার্মেন্টস এর পেছনে চায়ের দোকানদার। তার বাবা ও ছোট ভাই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি। তাদের দেখতে হাসপাতালে যাওয়ার উদ্দেশ্য ২২তলা গার্মেন্টসের সামনে রবিবার রাত আনুমানিক ৯টায় বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন এবং ওই সময় ৪জন ছিনতাইকারী তার সামনে আসে ও ৪জনের মধ্যে তিনজন ছিনতাইকারী তার বুকে সুইচ গিয়ার ঠেকায়, অপর একজন তার পকেট থেকে নগদ ৩০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে যায়। তিনি বাধা দিলে ছিনতাইকারীরা তার মাথায় ও পায়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করে।
এছাড়াও তার পায়ের উপর হাতুড়ি দিয়ে জখম করে, তার ডাক-চিৎকার শুনে আশে পাশের লোকজন আসলে তারা পালিয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যায় ও তার চিকিৎসা করায়। পরবর্তীতে এলাকার লোকজন থেকে খবর নিয়ে ৩ জনের নাম ঠিকানা জানা যায়। তারা হলো- কিশোরগ্যাংয়ের মূলহোতা আশিক (২৪), গন্ডার হৃদয় (২৭), গলাকাটা রাব্বি (২২), অন্য একজনের পরিচয় এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে চিকিৎসকের সাথে কথা বলে জানা যায়, যুবকের মাথা ও পায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তার মাথা থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। আহত যুবক জানান, চিকিৎসা নিয়ে এলাকায় এসে ছিনতাইকারীদের নাম পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর মিরপুর পল্লবী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। ৩ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত মামলা করতে পারেনি ভুক্তভোগী পরিবার। বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে মামলা না নেওয়ার অভিযোগ পল্লবী থানার এস আই মোহাম্মদ আলী’র বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, মিরপুরের পল্লবী এলাকায় স্থানীয়দের কাছে এক আতঙ্কের নাম আশিক বাহিনী। এ বাহিনীর প্রধান আশিক স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। নিজেকে কথিত এক যুবলীগ নেতার ছেলে বলে পরিচয় দেয়। স্থানীয় ব্যবসায়ী, তরুণ, চাকরিজীবী, বাড়িওয়ালাসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে না পেলে প্রকাশ্য চালায় তাণ্ডব। চক্রের একাধিক সদস্যকে বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার করলেও পুনরায় জামিনে এসে আশিকের নেতৃত্বে বেপরোয়া হয়ে পড়ে এই কিশোরগ্যাং।
কিশোরগ্যাং লিডার আশিক স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী হলেও পড়ালেখায় অনিয়মিত। তাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টিকটকে অস্ত্র হাতে বিভিন্ন অঙ্গ-ভঙ্গিতে সরব দেখা যায়। সেখানেও কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যরা নানাভাবে ক্ষমতা প্রদর্শন করে স্থানীয়দের মনে ভীতি তৈরি করেন। কিশোরগ্যাংয়ের মুলহোতা আশিকসহ অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্লবী থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য, পল্লবী থানা পুলিশ কিশোরগ্যাং আশিক বাহিনীর প্রধান আশিককে বেশ কয়েকদিন আগে গ্রেফতার করতে গেলে আশিকসহ গ্যাংয়ের সদস্যরা পুলিশের উপর চড়াও হয় এমনকি মারমুখী আচরণ করে পালিয়ে যায়, পরবর্তীতে আর তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
পল্লবী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুর রহমান মিয়া’র মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত না, এরকম ঘটনা ঘটলে অবশ্যই মামলা নেওয়া হবে।