শুক্রবার, মে ১০, ২০২৪
spot_img

নারায়ণগঞ্জে বিএনপি, পুলিশ ও আওয়ামীলীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ৫০

সংবাদ সিক্সটিনঃ ঢাকা সিলেট মহাসড়কের আড়াইহাজার বিএনপির নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় ঘটনাস্থল ও আশেপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

ঘটনার সময় আড়াইহাজার থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন কবির মোল্লা, এ এস আই আঃ মতিন ও কনস্টেবল নজরুলসহ অর্ধশতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হবার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পুলিশ সদস্য নজরুলের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮ টায় উপজেলার পাঁচরুখী এলাকায় মহাসড়কে শুরু হয় সংঘর্ষ। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি গিয়ে সোয়া ১০টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ৮ টায় অবরোধের সমর্থনে পাঁচরুখী এলাকায় মহাসড়কে মিছিল বের করে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। মিছিলে শত শত নেতাকর্মী অংশ নেয়। মিছিল থেকে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে অবরোধ সফল করতে স্লোগান দেয় নেতাকর্মীরা। মিছিলটি মহাসড়কে কিছুক্ষণ অবস্থান করার পর পুলিশ বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ টিয়াস গ্যাস ও গুলি ছুড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশকে ঘিরে ফেলে বিএনপির নেতাকর্মীরা। উপয় পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক বিএনপির নেতাকর্মী ও ৩ পুলিশ সদস্য আহত হন।

এসময় কয়েকটি বাস ভাংচুর, মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে যুবলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা-সহ আসলে তাদেরকেও ধাওয়া দেয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। কয়েকজন আওয়ামীলীগ কর্মী গুরুতর আহত হন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ জানান, আমাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী পুলিশ ও আওয়ামীলীগের হামলায় আহত হয়েছেন। পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আমাদের উপর নির্বিচারে গুলি করেছে। তবুও আমরা ৭২ ঘন্টা রাজপথে থেকে অবরোধ সফল করবো।

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহ জানান, বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়কে নৈরাজ্য করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারগ্যাস মারে।

অবরোধকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় দেওয়ানবাগ এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীরা একটি পিকআপ গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলেও জানা গেছে। নারায়ণগঞ্জ শহর ও সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সতর্ক ভূমিকায় অবস্থান করতে দেখা গেছে।

এদিকে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা ৩ দিনের অবরোধকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের দখলে ছিলো ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক। সকাল থেকে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুরসহ বিভিন্ন স্ট্যান্ডগুলোতে দলবেঁধে অবস্থান করছিলো।

এদিকে বিএনপি জামায়াতের নাশকতা ঠেকাতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে সক্রিয় ভূমিকায় ছিলো সোনারগাঁ থানা পুলিশ। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, সহ-সভাপতি মোশাররফ হোসেন, দীপক কুমার বনিক দীপু ও আওয়ামীলীগ নেতা এরফান হোসেন দীপসহ শতশত নেতাকর্মী অবরোধ বিরোধী স্লোগানে স্লোগানে মূখরিত করেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক।

এসময় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বলেন, বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধ বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেয়নি। জনগণ স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করছে। আমরা তাদের নাশকতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে নিয়ে যে কোন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে প্রস্তুত রয়েছি।

এ বিষয়ে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুরে ডিউটিরত নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ সার্কেল) শেখ বিল্লাল হোসেন জানান, জনগণের জানমাল রক্ষার্থে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে রয়েছি। যে কোন নাশকতা ঠেকাতে আমরা প্রস্তুত আছি। যতদিন বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ চলবে নারায়ণগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে।

আরো দেখুন
Advertisment
বিজ্ঞাপন

সবচেয়ে জনপ্রিয়