বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪
spot_img

কাল্পনিক রিপোর্টের প্রতিবাদ জানিয়েছেন এপিএস শামীম আহাম্মদ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ একটি জাতিয় দৈনিকে ‘‘এপিএস শামীমের সম্পদের পাহাড়’’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের তিব্র প্রতিবাদ জানিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) শামীম আহাম্মদ। শুক্রবার সকালে জাতিয় দৈনিকটির অনলাইন ভার্সনে প্রিন্ট সংস্করন হিসেবে ছাপা হওয়া রিপোর্টে একটি বাড়ি এবং অন্য এক ব্যক্তির ছবি প্রকাশ করা হলে তিনি এ প্রতিবাদ জানান।

ডাঃ শামীম আহাম্মদ জানান, দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় ‘‘এপিএস শামীমের সম্পদের পাহাড়’’ শিরোনামে প্রকাশিত রিপোর্টে যে বাড়ির ছবি দেখানো হয়েছে সেটি আমার বাড়ি নয় এবং একটি ছবি ছাপা হয়েছে সেটিও আমার নয়। আমার নামে অতি রঞ্জিত তথ্য দিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন রিপোর্ট প্রকাশ করে বিভ্রান্তি ছড়ানোসহ আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি পেশায় একজন অকোপেশনাল থেরাপিষ্ট এবং এই বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ এবং এই সংগঠনের একজন সেক্রেটারি জেনারেল। এছাড়া বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিলের আমি ২য় বারের মতো গেজেটেড নির্বাহী সদস্য। যুগান্তরের সাভার প্রতিনিধি মতিউর রহমান ভান্ডারী আমার নামে যে রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে সেটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। রিপোর্টটিতে কিছু ভুল তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

রিপোর্টে টিউশনি করে কোনরকমে জীবনযাপন করা বিষয়টি সঠিক নয়, আমার মনে হয় না যে, ছাত্র জীবনের পড়াশুনার পাশাপাশি টিউশনি করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা খারাপ কোন পেশা হতে পারে। আমার বাবা একজন প্রফেসর ছিলেন। তিনি একবার অসুস্থ্য হওয়ার পর তাকে নিয়ে সিআরপিতে আসি। তখন এখানকার কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পারি এবং এখানে আমি ভর্তি হয়ে সফলতার সাথে পাশ করি। এর ফাঁকে আমি নিজের পায়ে দাড়ানোর জন্য ২০০০ সাল থেকেই আমি ইংরেজী বিষয়ে টিউশনি করাতাম। সেসময় ফেয়ার কোচিং সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠানও চালু করি। সেখানে শিক্ষকতার পাশাপাশি আমি সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশেই একটি দোতলা ভবন নিয়ে রেস থেরাপি নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিতে থাকে।

একপর্যায়ে আমার মা মৃত্যুবরন করেন। আমার মায়ের নাম ছিলো বেলা। তার নামানুসারে পরবর্তীতে ২০০৬ সালে আমি বেলা রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার এবং বেলা স্পেশালাইজড ফিজিওথেরাপী এন্ড রিসার্চ সেন্টার নামে রেজিস্ট্রার্ড প্রতিষ্ঠান গড়ি তুলি। তখন থেকেই এসব প্রতিষ্ঠান থেকে আমার একটি ভালো আয় ছিলো। এরপর আমি বিয়ে করি, আমার স্ত্রী ও একজন চিকিৎসক। তিনি বর্তমানে ময়মনসিং ফিজিওথেরাপী কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ডাঃ শামীম আহাম্মদ বলেন, ছাত্রজীবন থেকে পড়াশুনার পাশাপামি আমি আমার প্রতিষ্ঠানগুলো চালিয়ে যাচ্ছি। এখনও পেশায় আমি এবং আমার স্ত্রী দুজনেই ফিজিও থেরাপিস্ট। এখনও আমি ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর এপিএস হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি একজন প্রফেশনাল থেরাপিস্ট হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। তবে সেখানে পরিমান অর্থ সম্পদের কথা বলা হয়েছে ব্যক্তিগতভাবে সেই পরিমান সম্পদের মালিক আমি নই।

তিনি আরও বলেন, আমাদের যে পরিকল্পনা ফিজিওথেরাপী, অকুপেশনাল থেরাপী, অটিজম, নার্সিং কলেজসহ সকল কার্যক্রম বেগবান করে সাধারন মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে কাজ করে যাবো। আজকে আমাদের প্রতিষ্ঠানের কারনে অজপাড়া গাঁয়ে রাস্তাঘাট হয়েছে। মানুষ এখন এলাকায় স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারছে। আমি ধন্যবাদ জানাই মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমানকে, তিনি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আমাকে অনেক সুযোগ দিয়েছেন এবং সহযোগীতা করেছেন।

শামীম আহাম্মদ বলেন, আমি যদি সম্পদের পাহাড়ই গড়ে তুলবো, তাহলে শহর ছেড়ে কেন আমি গ্রামে যাবো? আপনারা জেনে খুশি হবেন আমার গ্রামের বাড়িতে যে এগ্রো পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে সেটি একটি রেজিস্টার্ড সংগঠন। আমাদের এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠাগুলো হচ্ছে আইজি ডিপার্টমেন্ট বা ইনকাম জেনারেটিং ডিপার্টমেন্ট। সেখানে আমরা চেষ্টা করেছি সেই ইনকাম জেনারেটিং ডিপার্টমেন্ট থেকে এগ্রো বেইজড মৎস চাষ করে আমাদের যে কলেজগুলো রয়েছে সেগুলোকে একটা সাপোর্ট দেয়ার জন্য। এছাড়া আমার যে সম্পদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে এপিএস শামীম একা নয়, আমার অনেক শুভাকাঙ্খী রয়েছেন, বন্ধু রয়েছেন তারা আমাকে বুদ্ধি পরামর্শ এবং অর্থ দিয়ে সাপোর্ট দিয়েছেন।

সিআরপি’র অকুপেশনাল থেরাপিস্ট ডিপার্টমেন্ট এর এ্যাসোসিয়েট প্রফেসর এবং বিভাগীয় প্রধান শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, ডাঃ শামীম আহাম্মদ একজন প্রফেশনাল অকুপেশনাল ফিজিও থেরাপিস্ট। তিনি ২০০১ সাল থেকেই সিআরপি’র সাথে জড়িত এবং একজন প্রফেশনাল ফিজিও থেরাপিস্ট হিসেবে সন্মানের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ অকুপেশনাল থেরাপি এ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে আমাদের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও তার কোচিং সেন্টারসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিলো এবং তার মাধ্যমে সে নিজেও অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল।

সিআরপি’র সিনিয়র কনসালটেন্ট সৈয়দ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমি ২০০০ সাল থেকেই শামীম আহাম্মদকে চিনি। সে আমাদের এখানেই পড়াশুনা করে এখানেই প্রফেসনাল ফিজিও থেরাপিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। তিনি ইংরেজীতে দক্ষ একজন ব্যক্তি এবং শুরু থেকেই তিনি কোচিং সেন্টারসহ টিউশনি করে আয় করেছেন এবং তিল তিল করে আজকে তার যোগ্যতার ভিত্তিতেই নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে আজকে যে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে এটা আসলে তার চরিত্রের সাথে যায়না এবং রিপোর্টটি মনগড়া বানোয়াট বলেই মনে হচ্ছে আমার কাছে।

আরো দেখুন
Advertisment
বিজ্ঞাপন

সবচেয়ে জনপ্রিয়