সংবাদ সিক্সটিনঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একশো গজের ভেতরে বিএনপির দুই গ্রুপের দুই প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। এতে স্থানীয় নেতাকর্মীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এবং যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছে তৃণমূল বিএনপি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের পক্ষে গত ২০ ফেব্রুয়ারী রাতে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেনসহ পৌর বিএনপির বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ উপজেলার উদ্ধবগঞ্জ বটতলা এলাকায় বিএনপির প্রধান কার্যালয় উদ্বোধন করেন। এর পরেই শুরু হয় রাজনৈতিক মেরুকরণ। এদিকে গত ১৩ মার্চ রাতের আধারে ঐ প্রধান কার্যালয়ের একশো গজ নিকটে উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ফটকের সামনে সায়মা প্লাজায় পৌর জাতীয় পার্টির যুগ্ম সম্পাদক ফারুক আহমেদ তপন কমিশনারের নেতৃত্বে সংস্কারপন্থী হিসেবে খ্যাত বিএনপি নেতা রেজাউল করিমের ছবি সম্বলিত আরেকটি প্রধান কার্যালয় উদ্বোধন করেন, যার সাইনবোর্ড বর্তমানে দৃশ্যমান।
সোনারগাঁ পৌরসভা বিএনপি সভাপতি শাহজাহান মিয়া বলেন, সংস্কার পন্থী রেজাউল করিম কিংবা তার ব্লকের কারো থানায় ও পৌরসভায় বিএনপির কোন পদ পদবী নেই। পদ-পদবী বিহীন নেতারা কিভাবে রাতের আঁধারে আমাদের বর্তমান কমিটির দেয়া প্রধান কার্যালয়ের পাশেই আরেকটি কার্যালয় চালু করে? সংস্কারপন্থীরা আগেও বিএনপিকে নিমজ্জিত করার চেষ্টা করেছে। তারা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের থানা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা হয়েছে বিষয়টি নিয়ে হাইকমান্ডের কাছে অভিযোগ দেয়া হবে।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান জানান, প্রতিটি উপজেলায় একটিই প্রধান কার্যালয় থাকে। আমাদের বর্তমান কমিটিকে না জানিয়ে কমিটির বাহিরে থেকে রেজাউল করিমের ছবি দিয়ে কিভাবে এক শ্রেণির কুচক্রীমহল আরেকটি কার্যালয় স্থাপন করে? স্পষ্ট যে বিএনপির সুনামক্ষুন্ন করতেই তারা এ ধরনের ঘৃণিত কাজ করছে।
কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকদলের সাবেক সহ-সভাপতি অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল বলেন, একই উপজেলায় বিএনপির একাধিক গ্রুপ রয়েছে। তাদের কার্যালয় তো আলাদা থাকতেই পারে। একই উপজেলায় পাশাপাশি দু’টি বিএনপির প্রধান কার্যালয় এবং একটি কার্যালয়ে রেজাউল করিমের ছবি কেন দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছবি ছাড়া যে কার্যালয় তা বর্তমান কমিটির কার্যালয়, অন্যটা রেজাউল করিম গ্রুপের কার্যালয়। এ বিষয়ে রেজাউল করিমের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান বলেন, স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের আমলে অর্ধশতাধিক মামলা খেয়েছি তবুও রাজপথ থেকে সরে যাইনি। নেতাকর্মীদের বুকে আগলে রেখে ছাত্র জনতার আন্দোলনে মূখ্য ভুমিকা পালন করেছি। ৫ আগষ্টের পর সংস্কারপন্থী খ্যাত রেজাউল করিম পূনরায় বিএনপির সুবিধা নিতে সোনারগাঁকে গ্রুপিং করার পায়তারা করছে। দলের পদ-পদবী বিহীন জাতীয়পার্টি ও আওয়ামীলীগ নেতাদের নিয়ে রাতের আঁধারে আলাদা কার্যালয়ে সাইনবোর্ড সাঁটিয়েছে। যা খুবই বিব্রতকর। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে৷ বিষটি আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকদের জানিয়েছি। শীঘ্রই তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব জানান, একই উপজেলায় দুইটি দলীয় প্রধান কার্যালয় কখনো থাকতে পারে না। ব্যক্তিগত কার্যালয় থাকতে পারে। আর কার্যালয়ে ছবি সম্বলিত সাইনবোর্ড দেয়ার তো প্রশ্নই আসেনা! একটা কার্যালয় হওয়ার পর আরেকটা কার্যালয় যারাই করেছে তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।