শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
spot_img

সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সফলতা

সংবাদ১৬.কমঃ নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখন শতভাগ সফলতা অর্জনের লক্ষ্যে ৮টি বিষয়কে সামনে রেখে এগিয়ে চলেছে। ডাক্তারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা, রোগীদের সেবার মান বৃদ্ধি, ডেলিভারি রোগীর বিশেষ যত্ন, রোগীর চিকিৎসা সেবা বৃদ্ধি, শিশু রোগীর উন্নত চিকিৎসা, মাতৃ স্বাস্থ্য, সব যন্ত্রপাতির ব্যবহার ও রোগ নির্ণয় এবং হাসপাতালের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে চলছে হাসপাতালের নিয়মিত কার্যক্রম।

প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক রোগী চিকিৎসাসেবা গ্রহণের জন্য হাসপাতালে আসছেন। স্লিপ দেয়ার স্থানে রোগীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। ৫ টাকা দিয়ে স্লিপ সংগ্রহ করে রোগীরা চলে যাচ্ছেন প্রয়োজনীয় ডাক্তারের চেম্বারের সামনে। চেম্বারগুলোতেও দীর্ঘ লাইন। আউটডোর এবং ইনডোরে শুধু রোগী আর রোগী। ১৬ জন চিকিৎসক বিরামহীনভাবে রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। ইনডোরে রোগীদের ওয়ার্ডগুলোতে টাইলস শোভা পাচ্ছে। পরিষ্কার পরিছন্নতার জন্য রয়েছে আয়া।

ডাঃ সাবরিনা হক যোগদানের পর সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। বিগত ১ বছরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের মধ্যে রয়েছে: ৩১ শয্যা হতে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরনের লক্ষ্যে নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন, সামগ্রিক পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণ ও এর লক্ষ্যে নিজ ব্যবস্থাপনায় জনবল নিয়োগ। মাতৃ ও শিশুবান্ধব পরিবেশে চিকিৎসা প্রদান নিশ্চিতকরণ। স্বাভাবিক প্রসবের পরিমান বৃদ্ধিকরনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন। নিয়মিত সিজারিয়ান অপারেশন চালু রাখা। বাচ্চাদের খেলার জন্য “কিডস কর্নার” নির্মান। অসংক্রামক ব্যধি নিয়ন্ত্রনের লক্ষ্যে ঘঈউ কর্নার স্থাপন। ডেন্টাল কর্নার সংস্কার ও চালু করা। হাসপাতালের কয়েকটি অংশে সৌন্দর্যবর্ধন, ফুল ও ভেষজ বাগান নির্মান। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেবা প্রদান ব্যবস্থা ও মুক্তিযোদ্ধা কেবিন বরাদ্দ। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পিট নির্মান।

কোভিড-১৯ প্রতিরোধকল্পে চলমান টিকা প্রদান কার্যক্রম জোরদারকরন। হাসপাতালে আগত রোগীদের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষা সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে Auto Analyzer এবং Electrolyte Analyzer মেশিন সংগ্রহ। হাসপাতালে আগত রোগীদের সুবিধার্থে দুইটি ওয়াশ ব্লক নির্মাণ।

জরুরী বিভাগে আগত মহিলা রোগীদের জন্য পৃথক কর্নার স্থাপন। এছাড়া “মুজিব কর্নার” নির্মাণ এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। শিশুদের নিয়মিত ঊচও কার্যক্রম শক্তিশালী করার লক্ষ্যে স্থায়ী টিকা কেন্দ্র স্থাপন। হোমিওপ্যাথি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল সেবা পুনরায় চালু করা। ১৯ যক্ষ্মা নিরাময় ও নির্মূলের লক্ষ্যে যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়ের উদ্যেশ্যে জিন এক্সপার্ট মেশিন স্থাপন। এছারাও স্বীকৃতি স্বরূপ : উপজেলা কর্তৃক আয়োজিত “ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা” হাতের মুঠোয় Health System Scoring সেবা ‘ ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অর্জন।

এবিষয়ে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সজিব রায়হান জানান, হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাবরিনা হক যোগদানের পর থেকেই পাল্টে গেছে হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার মান। এখন একটি সিস্টেমের মাধ্যমে চলছে সব কিছু।

আলট্রাসনো, এক্স-রে, ইসিজি, ডেন্টাল সরঞ্জামাদি, নেবুলাইজার, অ্যামবুলেন্স সব কিছুই এখন সচল। রোগীরা এখন নিয়মিতভাবে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে। এক্স-রে, ইসিজি, নেবুলাইজার ও প্যাথলজি বিভাগ থেকে চাহিদা মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করতে পারছেন রোগীরা। সপ্তাহে ৩ দিন আল্ট্রাসনো এবং সিজারিয়ান সমস্যার ও সমাধান করা হচ্ছে।

সম্প্রতি জামপুর ইউনিয়ন থেকে শিশু কন্যার চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন। মেগলা নিজের শিশু কন্যার চিকিৎসা পাওয়ার পর জানান, হাসপাতালে কিছু একটা পরিবর্তনের আভাষ পাওয়া যাচ্ছে। আগেও হাসপাতালে এসেছি। কিন্তু এমন দেখিনি।
মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় থেকে এসেছেন আমিন নামের এক যুবক। তিনি স্লিপ সংগ্রহ করে মেডিসিন ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে দেখানোর জন্য অপেক্ষমাণ ছিলেন। এসময় দেখা যায় প্রায় ৬০ জন রোগীর দীর্ঘ লাইন। চিকিৎসা নিতে আসা এসব রোগীরা চিকিৎসা এবং প্রয়োজনীয় ঔষুধ পেয়ে খুশি, তিনি বলেন, হাসপাতাল এখন অনেক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। হাসপাতালে এলেই চিকিৎসা, ঔষধ পাওয়া যাচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় যখনই আসি না কেন, চিকিৎসা পাচ্ছি আমরা।

সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাবরিনা হক জানান, উপজেলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এখন হাসাপাতালের সব ইউনিট প্রস্তুত। স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়েই স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে চলেছি আমরা। স্থানীয় দানশীল ও বৃত্তবানরা হাসপাতালের উন্নয়নে এগিয়ে এলে প্রভূত উন্নয়ন নিশ্চিত করা যেত স্বাস্থ্যসেবায়।

আরো দেখুন
Advertisment
বিজ্ঞাপন

সবচেয়ে জনপ্রিয়