সাভার প্রতিনিধিঃ ঢাকার সাভার উপজেলার বিরুলিয়া ইউনিয়নে দত্তপাড়া গ্রামে ২০১৮ সালের একটি হত্যা মামলার আসামিরা বাদীকে প্রাণে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে গত বৃহস্পতিবার ৮ই জুন হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন সন্ত্রাসীদের হামলায় আহতদের স্বজনেরা।
আহতদের স্বজনদের তথ্যের ভিত্তিতে সাভার বিরুলিয়া ইউনিয়নের দত্তপাড়া গ্রামের ২০১৮ সালের একটি হত্যা মামলা প্রত্যাহার না করায় তারই জের ধরে আসামি পক্ষের সন্ত্রাসী বাহিনীর অতর্কিত হামলায় হত্যা মামলার বাদীসহ তার বড়ভাই মামলার সাক্ষীরাসহ ৩ জন মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বাদীর স্বজনেরা বলছে, আসামি পক্ষের সন্ত্রাসী বাহিনীর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে। হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকেই সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ৮ই জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিরুলিয়া দত্তপাড়া আমিন মডেল টাউনের একটি রেস্টুরেন্টের ভিতরে বিরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি জাবেদ ও তার সহযোগীদের উপর এই অতর্কিত হামলা চালানো হয়।
আহত তিনজনের মধ্যে রয়েছে, বিরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি মো.জাবেদ হোসেন ৪০ ও আতিক ২৮ এবং আমির হোসেন। এদের মধ্যে জাবেদের অবস্থা আশংকাজনক। এ ঘটনায় আহতের ছোটভাই মো. আকতার হোসেন বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্ত আসামিরা সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়ননের মো.মোশারফ করিম অপু ২৭, মো. আলাউদ্দিন ৩৫, মো.জাকির হোসেন ২৫, মো. মুলামদী মন্ডল ৫০, মো. আব্বাস ২৮, মো. সোহেল ৩৩, মো.শান্ত ২৪,ও মো.জীবন ২৬।
একাধিক তথ্য মতে জানা যায়, ২০১৮ সালের হত্যা মামলার প্রতক্ষ্যদর্শী সাক্ষী ছিলেন গুরুতর আহত জাবেদ হোসেন। উক্ত মামলার অভিযুক্ত আসামী মোশারফ করিম অপু, মো. আলাউদ্দিন ও মো. জাকির হোসেন দীর্ঘদিন যাবত মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ ও হুমকি প্রদান করে আসছিলেন। এ হত্যা মামলার বাদীপক্ষ প্রত্যাহার না করায় বিবাদী তাদের সহযোগী মুলামদী মন্ডল, মো. আব্বাস, মো. সোহেল, মো. শান্ত ও মো. জীবন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গত বৃহস্পতিবার ৮ ই জুন সন্ধ্যায় বিরুলিয়া দত্তপাড়া আমীন মডেল টাউনে আফটাউন নামক একটি রেস্টুরেন্টে জাবেদ সহ তার সাথে থাকা সঙ্গীরা চা নাস্তা খাওয়ার সময় রেস্টুরেন্টের ভিতরে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।
অভিযুক্ত মুলামদী মন্ডল চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আহত জাবেদের উপর আঘাত করলে জাবেদ তখন হাত দিয়ে ফিরাতে গেলে দুই হাতের আংগুল ও কবজিতে মারাত্মক জখম হয় এবং ডানহাতের বৃদ্ধাঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এসময় আরেক অভিযুক্ত মোশারফ করিম অপু ধারালো ছুরি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে এবং তার বাম পায়ের রগ কেটে যায়। এসময় জাবেদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে আতিক নামে তার এক ভাতিজাকেও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেয় হামলাকারী সন্ত্রাসীরা।
এ হামলার শিকার প্রত্যক্ষদর্শী বিরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মন্ডল বলেন, গত ৮ই জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি জাবেদসহ আমরা কয়েকজন রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে স্থানীয় শীর্ষ সন্ত্রাসী ও হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামী মুলামদীর নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আমাদের উপর পূর্ব-পরিকল্পিত ভাবে অতর্কিত হামলা চালায়, এসময় আমি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও জাবেদ ও আতিক এবং আমাদের আরেকজন সহযোগীকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিরুলিয়া ইউনিয়ন বাসীরা বলেন, অনতিবিলম্বে সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির জোর দাবি করছি।
এ ঘটনায় সাভার মডেল থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, আহতের ভাই বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আমাদের পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে এবং দ্রুত আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।