সাকিব হোসেইন, (কুমিল্লা) সংবাদদাতাঃ কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় মসজিদের জায়গা নিয়ে বিরোধের এক যুগ পার হলেও মিটছে না দুই বংশের বিরোধ। দফায় দফায় সংঘর্ষ ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেই চলেছে।
এরই জের ধরে রবিবার ভোরে উপজেলার দক্ষিণ বলরামপুর ভুইয়া বংশের সৌদি প্রবাসী শেখ সাবের সীমানা প্রাচীর ও একটি দোচালা ঘর ভাংচুর করার অভিযোগ ওঠে সরকার বংশের আউয়াল গংদের বিরুদ্ধে। এঘটনাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ বলরামপুর গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ওই গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, সরকার বাড়ি ও ভুইয়া বাড়ির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মসজিদের জায়গা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে এক মাস ধরে তিন দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অত্যন্ত ১০ জন আহত হয় এবং উভয় পক্ষের মামলা চলমান রয়েছে।
ভুইয়া বাড়ির সৌদি প্রবাসী শেখ সাবের স্ত্রী ফজিলত নেছা বলেন, সরকার বাড়ির আউয়াল গংদের সাথে আমাদের এক মাস ধরে মারামারি ও মামলা মোকদ্দমা চলে আসছে। তারই জের ধরে আজ ২১ মে ভোরে সরকার বাড়ির লোকজন লোহার রড, হাতুরি, লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে আমাদের বাড়ির দেয়াল ভেঙ্গে ইট গুলো নিয়ে গেছে ও একটি দোচালা টিনের ঘর ভেঙ্গে ফেলেছে এবং বিল্ডিং ভাংচুর করেছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
সরকার বাড়ির সৌদি প্রবাসী শেখ ফরিদ এর স্ত্রী শাহিনা বেগম বলেন, শেখ সাব মসজিদের জায়গা দখল করে দেয়াল দিয়েছে। আজ সকালে সমাজের লোকজন গিয়ে দেয়াল ভেঙে ফেলেছে। এটা দশজনের কাজ তাতে আমাদের স্বার্থ কোথায়? এখানে আমাদের কোনো দোষ নেই। ভূইয়া বাড়ির লোকজন এর আগেও নিজেদের পুকুরে নিজেরা বাজার থেকে মাছ কিনে এনে মিথ্যা মামলা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আমরা নাকি পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ মেরে ফেলেছি। অথচ ওই পুকুরে কোনদিন মাছ চাষই হয়না বলে জানান এলাকাবাসি। এর আগে গত ২৪ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখে আউয়াল সরকারসহ ৫ জনকে মেরে আহত করে শেখ সাবের লোকজন। বাড়িতে হামলা করে ঘর-দোয়ার ভাংচুর করে এবং নগদ ৪ লক্ষ ৮০ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
প্রবাসি শাহ পরানের স্ত্রী শেপী বলেন, তারা আমার গায়েও হাত দিয়েছে। ঘরের জানালার কাচ, শো-কেস ভাংচুর করে ৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। আমরা বাড়িতে থাকতে পারছি, তারা দফায় দফায় হামলা চালায়।
এদিকে ঘটনার সত্যতা জানতে মসজিদ কমিটির সভাপতি মনিরুল ইসলাম ও সমাজের গণ্যমান্য কয়েকজন বলেন, মসজিদের জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা চলছে, কিন্ত আজ যারা শেখ সাবের দেয়াল ভেঙেছে এটা তাদের ব্যক্তিগত এবং দুই বংশের মারামারির জের।
তিতাস থানার ওসি সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, দক্ষিণ বলরামপুর গ্রামে দুই পক্ষের মারামারির ঘটনায় পূর্বেই থানায় মামলা রয়েছে। আজ বাড়ির সীমানা প্রাচীর ও ঘর-বাড়ি ভাংচুর করেছে শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এখন আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত আছে এবং লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।