রওশন আরা শিলা, নওগাঁ থেকেঃ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যকে বিশ্ব সাহিত্যে সগৌরবে পৌঁছে দিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। কবি একাধারে কবি, গীতিকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সমাজ সংস্কারক, অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ। রবীন্দ্রনাথ অসাম্প্রদায়িক মানুষ হিসেবে বিশ্বে দারুনভাবে নন্দিত হয়েছেন।
বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২ তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার বিকাল ৩টায় নওগাঁর পতিসরে আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এসব কথা বলেছেন। কবির জন্মজয়ন্তীর এবারের আলোচ্য বিষয় ছিল সমাজ সংস্কারক রবীন্দ্রনাথ।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেছেন কবির সৃষ্টিকর্ম শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বের সাহিত্যানুরাগী মানুষদের আন্দোলিত করেছে।
মন্ত্রী আরও বলেছেন বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবিকে হৃদয়ে ধারন করতেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রবীন্দনাথকে হৃদয়ে কতটুকু ধারন করতেন তার উদাহরন তুলে ধরে বলেন তিনি ১৯৭১ সালে ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরে এসে প্রদত্ত বক্তব্যে রবীন্দ্রনাথকে স্মরন করেছিলেন।
মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথকে শিক্ষানুরাগী হিসেবে উল্লেখ করে বলেন কবির চিন্তার সাথে আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় ঘটাতে পারলে আমরা একটি সুষম শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করা সম্ভব হবে। মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথের মানবতা ও অসাম্প্রদায়িকতার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেকে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার আহবান জানান।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের সচিব মোঃ খলিল আহম্মেদ। এ অনুষ্ঠানে স্মারক আলোচক হিসেবে উপস্থিত থেকে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাষ্টি মফিদুল হক। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক রাজশাহী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম।
বক্তব্য রাখেন নওগাঁ-২ পত্নীতলা-ধামইরহাট আসনের সংসদ সদস্য শহিদুজ্জামান সরকার, নওগাঁ-৫ সদর আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার নিজামুদ্দিন জলিল জন, নওগাঁ-৬ রানীনগর – আত্রাই আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন হেলাল, নওগাঁর জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান এবং পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক এবং রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শাহ আযম। পরে ঢাকা’র প্রথিতযশা শিল্পীদের সমন্বয়ে নওগাঁ জেলা শিল্পকলা একাডেমীর শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, নওগাঁর পতিসরে রবীন্দ্রজয়ন্তীর মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল। নওগাঁ জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে পতিসর কাচারীবাড়ি রবীন্দ্র ভক্তদের মহা-মিলন মেলায় পরিনত হয়। পতিসরের চারদিকের জনপদ নওগাঁ জেলার সদর, রানীনগর ও আত্রাই, বগুড়া জেলার আদমদিঘি ও নন্দীগ্রাম, নাটোর জেলার সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এই উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।