আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ শনিবার (৮ এপ্রিল) জেদ্দায় ওআইসির নির্বাহী কমিটির এক জরুরি বৈঠকে বাংলাদেশের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মো. আবুল হাসান মৃধা সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় এবং পবিত্র আল আকসা মসজিদে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার তীব্র নিন্দা জানান।
জেদ্দার ওই বৈঠকে পবিত্র রমজান মাসে আল আকসা মসজিদে শান্তিপ্রিয় মুসল্লিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিন্দা প্রকাশের পাশাপাশি ফিলিস্তিনি মুসলিম ভাই-বোনদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ।
ওআইসির উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি আবুল হাসান মৃধা বলেন, ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বারা মৌলিক নাগরিক নিয়ম, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন এবং আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে, ধর্মের স্বাধীনতাকে একটি মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে ধরে রাখতে হবে এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে, বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসে।
ওআইসির উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি দিনে দিনে আরো খারাপ হচ্ছে।
আবুল হাসান মৃধা বলেন, চলতি বছর ইসরায়েলি হামলায় ৯৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, সেখানে ফিলিস্তিনিদের জমি দখল করা হয়েছে। এছাড়া ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি মন্ত্রীরা ঘৃণামূলক বক্তব্য ছড়াচ্ছেন। দখলদার বাহিনী ইসরায়েলের নৃশংসতা এবং আগ্রাসন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এতটাই এলোমেলো এবং ঘনঘন হয়ে উঠেছে যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই দীর্ঘায়িত সংকট এবং ফিলিস্তিনিদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের প্রতি উদাসীন বলে মনে হচ্ছে।
ওআইসির উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, আমরা সহিংসতা শান্ত করার জন্য চলতি বছরের শুরুতে জর্ডানের নেতৃত্বে সংলাপের প্রশংসা করি। তবে দখলদার বাহিনী সেই প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করেছে। বাংলাদেশ ওআইসিকে জাতিসংঘসহ যেকোনো আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিন ইস্যুতে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানায়।
তিনি বলেন, মুসলিম উম্মাহর সদস্য হিসেবে আসুন আমরা একসঙ্গে শক্ত হয়ে দাঁড়াই এবং মানবতার উন্নতির জন্য কাজ করি এবং ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করি।
ওআইসির উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, পূর্ব জেরুজালেমের রাজধানী হিসেবে ১৯৬৭ সালের সীমান্তের ওপর ভিত্তি করে একটি স্বাধীন দেশ এবং একটি সার্বভৌম এবং কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য ফিলিস্তিনের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার উপলব্ধি করার জন্য বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি।
তিনি বলেন, ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান আল-আকসা মসজিদ এবং ফিলিস্তিনিদের মাতৃভূমিকে রক্ষার আহ্বান জানাচ্ছি। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নিয়মের বিরুদ্ধে অধিকৃত ভূখণ্ডে বারবার এ ধরনের সহিংসতা বন্ধ করতে এবং ঘৃণাত্মক বক্তব্য বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ওআইসিতে সৌদি আরবের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. সালেহ সুহাইবান। সভায় ওআইসির মহাসচিব হিসেন ইব্রাহিম তাহা ও বিভিন্ন দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।