বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
spot_img

পানিশূন্য পূনর্ভবা নদীর তলদেশ এখন ধু-ধু বালুচর

পোরশা (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর পোরশা উপজেলার নিতপুর সীমান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের উত্তাল পূনর্ভবায় পানি নাই। নাব্যতা হারিয়ে এখন বালুচরে পরিণত হয়েছে। ফলে ধু-ধু এ খরায় এর তলদেশে খেলার মাঠ হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। নদীতে পানি না থাকায় কয়েক হাজার হেক্টর জমির বোরো ধানের ক্ষতির আশংকা দেখা দিয়েছে।

জানাগেছ, নদীটিতে এক সময়ের ঢেউয়ের তালে চলাচল করতো অসংখ্য পাল তোলা নৌকা, লঞ্চ, ষ্টিমার। মাঝিরা নৌকা নিয়ে ছুটে চলতো গোমস্তাপুর, রহনপুর, নাচোল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সহ দেশের অন্যান্য উপজেলায় ব্যবসা বানিজ্য করতো। ওইসব উপজেলায় বিভিন্ন স্হানে গড়ে উঠা বড়বড় হাট বাজার ব্যবসার জন্য বিভিন্ন পন্য নিয়ে ব্যবসায়ীরা তাদের ছোট বড় নৌকায় পাল তুলে ছুটে চলতেন। শুধু পন্যই নয় হাটবাজার গুলিতে বিক্রির জন্য তারা নিয়ে যেতেন গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি। এ সময় পূনর্ভবা ছিল পূর্ন যৌবন।

এলাকার একমাত্র নদীপথ হিসাবে ব্যবহার করা অসংখ্য মানুষ ব্যবসা বাণিজ্যর মাধ্যমে জীবন জীবিকার শক্ত ভীত গড়ে তুলেছিল।

শুধু হাটবাজারই নয়, নদীটিকে গড়ে উঠেছিল অনেক জনপদ। এর পানি দিয়ে কূষকরা দুই পাড়ের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে সবুজ ফসল ধান ফলাতো। এই পানি দিয়ে নানা ফসল ভরে উঠতো কূষকের । আবার ছাট বড় বিভিন্ন প্রজাতীর মাছের অফুরন্ত উৎসব ছিল এই পূনর্ভবায়। মাছ পাওয়া যেতো সারা বছর ধরে। ফলে জীবিকার সন্ধানে নদীর সংলগ্ন ও আশে পাশের গ্রামগুলিতে অসংখ্য জেলে পরিবারর বসতি গড়ে উঠেছিল। জীবিকার নিবার্হর জন্য জেলেরা রাতদিন ডিঙি নৌকায় জাল নিয়ে চষে বেড়াতেন মাছ ধরার জন্য। মাছ বিক্রি করে অসংখ্য জেলে পরিবারর সংসার চলতো। সময় গড়িয়ে চলার সাথে সাথে সেই ভরা যৌবনে পূনর্ভবা এখন খেলার মাঠ পরিণত হয়েছে।

খরার সময় বালু ছাড়া আর কিছুই দেখা যায়না এর তলদেশের। আশপাশের জেলে পরিবার গুলো হয়ে গেছে প্রায় বিলীন। নদীর পাহাড় গুলি পরিনত হয়েছে কুষি জমি। নদী গর্ভ জেগে উঠা চর এলাকার শিশুরা খেলছে ক্রিকেট, ফুটবল সহ বিভিন্ন খেলা। এক সময়র ব্যবসা বণিজ্যর উৎসগুলো হয়ে গেছে চিরতরে বন্ধ। থমকে গেছে নদী, নিভে গেছে বিপুল সম্ভবনা।

নদী কেদ্রীক সম্ভবনাগুলো নিভে গেলেও কেউ কখনও এসব নিয়ে ভাবেনা। সরকারীভাবে নদীটি খননের পদক্ষেপ নেয়া হলে সারাবছরেই এতে পানি থাকতো। এতে কুষকদের জমির ধানের উৎপাদন বাড়তো। নদিটিও পরিনত হতো না বালুচর।

তাছাড়া নদীটি কখনও খনন বা রক্ষণাবেক্ষনের কোন উদ্যাগ নেয়া হয়নি। ফলে নদীটির পাহাড়ে ফসলের জমিতে পরিণত হয়েছে। এ সুযোগ কে অনেকেই ধান চাষ করছেন। খনন না করলে এক সময়ের উত্তাল পূনর্ভবা হয়তো বা মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে বলে বিশিষ্টজনদের অভিমত।

আরো দেখুন
Advertisment
বিজ্ঞাপন

সবচেয়ে জনপ্রিয়