ভ্রাম্যমান প্রতিনিধিঃ পুলিশের ভয় দেখিয়ে মাদক দিয়ে ফাঁসানো ও জিম্মি করে টাকা আদায়। একসময়ের স্পা সুন্দরী এখন কক্স কিং মাফিয়া নারী হিসেবে পরিচিত। কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেল মোটেল জোনগুলোতে তার প্রচন্ড বিচরণ রয়েছে।
প্রতি রাতেই চলে কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেল মোটেল জোনগুলোতে তার পতিতা সাপ্লাই। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিয়ে আসা নারীদেরকে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই প্রতারক মহিলা। সেই সাথে রয়েছে তার নানা ধরনের মাদক সিন্ডিকেটের বিশাল আকার চেইন।
এসব মাদক বিক্রি করে সে এখন আড়ালে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলেছে। যদিও বা তা প্রকাশ্যে আসেনি কারো নজরে। তবে তার পতিতা সাপ্লাই সহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে বাঁধা দিলেই বাধাপ্রদানকারীর উপর নেমে আসে অকাল।
বলেছিলাম কক্সবাজার শহরের ডিসি ফ্লট ৫১ একর এর বাসিন্দা রমজান আলীর স্ত্রী রুবি আক্তারের কথা। রুবি আক্তার এক সময়ে অভাব অনটনে দিন কাটালেও এখন তা আর তার কাছে যেন তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য । রুবি আক্তার সেই সময় সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকায় গোল্ড থাই স্পাতে চাকরি করে নিজে পতিতা সাপ্লাই দিয়ে গেস্টদের জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এসবের বেপরোয়া অভিযোগের কারণে ওই স্পা থেকে তাকে বিদায় করলেও থেমে যায়নি তার বেপরোয়া বেহায়াপনা। এরপর থেকে পিছনে তাকাতে হয়নি তার।
রুবি আক্তার কখনো নিজেকে কক্সবাজারের পৌর কাউন্সিলর এর বোন কখনো পৌর মেয়রের কাছের আত্মীয় বলে মানুষকে বেপরোয়াভাবে হয়রানি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। কখনো পুলিশের ধমক দিয়ে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর ভয়ভীতি দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাচারকৃত নারীকে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তি করার অভিযোগও অহরহ।
রুবি আক্তার স্পাতে চাকরি করা কালীন কক্সবাজারের উচ্চপদস্থ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের সাথে সু সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বর্তমানে এসব কে নিজের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে মানুষের সাথে নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাত্রা যেন অতুলনীয় হয়ে পড়ছে।
যেখান থেকে সাধারণ ও অসহায় মানুষ রেহাই পাচ্ছে না। এক সময় তার স্বামী রমজান আলী চান্দের গাড়ি চালালেও এখন রমজান আলীর জীবনযাপন দেখে সাধারণ মানুষ হতভম্ব।
তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, রমজান আলী ও রুবির ছেলে আশিকসহ টেকনাফ থেকে ইয়াবা এনে ঢাকাই পাচার করে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন, তবে তা প্রকাশ্যে নয়। গোপনীয়ভাবে বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন মাধ্যমে টাকার পাহাড় গড়িয়েছেন বলেও জানা গেছে।
২০২২ সালের মার্চ মাসে রুবির ছেলে আশিক কুমিল্লা বিশ হাজার পিস ইয়াবাসহ ধরা খেয়ে জেল খাটার পর থেকে বেরিয়ে আসছে তলের বিড়াল। তবে আশিক জামিনে বেরিয়ে আসার পর থেকে ফের বেপরোয়া হয়ে পুরোদমেই চালিয়ে যাচ্ছে মা ছেলের মাদক, পতিতা সাপ্লাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড।
গত কয়েকমাস ধরে তাদের অবৈধভাবে গড়ে তোলা সম্পদ বিক্রি করার প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকেও হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
পপি আক্তার নামের এক অসহায় নারীকে কম দামে জায়গা ক্রয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আঁট লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। যা সংবাদ সম্মেলন করেও কোন সোরাহা পায়নি। তবে ভুক্তভোগী পপী এখন প্রান নাশের হুমকিতেও রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রুবি আক্তারের কাছে কক্সবাজারের উচ্চপদস্থ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জিম্মি হয়ে পড়েছে। তবে তাদেরকে ব্যবহার করে এবং তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে প্রতারনা করে হাতিয়ে নেওয়া টাকা ফেরতও দিচ্ছেনা। প্রতারক রুবিকে যারা শেল্টার দিচ্ছেন তাদের মধ্যে সরাসরি তিনজনের নাম উঠে এসেছে, একজন সদর থানার পুলিশ কর্মকর্তা এসআই শাহ নেওয়াজ ও অপর দুজনের মধ্যে একজন মহিলা কাউন্সিলর নাসিমা আক্তার বকুল, অন্যজন কুখ্যাত সন্ত্রাস ও বিভিন্ন অস্ত্র ও মাদক মামলার আসামি মনু গ্রুপের প্রধান মনু।
রুবি আক্তার’র কাছে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট ভিত্তিহীন বলে জানান। তিনি আরো বলেন আমাকে সমাজের কাছে ছোট করতে কিছু কূচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে এবং সাংবাদিক ভাইদেরকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার সুনাম ক্ষুন্ন করতে চাচ্ছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার এস আই শাহনেওয়াজ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি নিজেকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন। রুবি আক্তারের এসব অবৈধ বেহায়াপনা কর্মকাণ্ডের বিষয়ে অবগত নন। তবে সে যেই হোক না কেন অপরাধ করলেই ছাড় দিতে নেই।
কক্সবাজার পৌরসভার ১০,১১,১২ সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নাসিমা আক্তার বকুল বলেন, রুবি নামের কোন মহিলা তার চেনা জানা নেই । তবে কেউ যদি আমার নাম ভাঙিয়ে আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার পাঁয়তারা চালায় সরাসরি জড়িত ব্যক্তির অপরাধ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবো।
মনু গ্রুপের প্রধান মনুর কাছে এ বিষয় নিয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে ফোন রিসিভ না করার কারণে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অতি দ্রুত এই স্পা ডাইনি, প্রতারক নারী ও ইয়াবা রমনী, পতিতালয়ের সাপ্লায়ার রুবির বিরুদ্ধে আইনানোগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়েছে সচেতন মহল।